হঠাৎ করেই আলোচনায় উঠে এলেন তিনি। সরাসরি রাজনীতির মানুষ না হয়েও আওয়ামী লীগ বা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী না হয়েও তাকে মন্ত্রী করাতেই সবখানেই তাকে ঘিরে আলোচনা। কে তিনি? কী করেন? মোস্তাফা জব্বারের পরিচিতি বিডি২৪লাইভ ডট কমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল। এক নজরে দেখে নিন-
মোস্তাফা জব্বার একজন বাংলাদেশী তথ্যপ্রযুক্তিবিদ। ১৯৪৯ সালের ১২ই আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সাবেক সভাপতি। তাকে কম্পিউটারে বাংলা ভাষা যুক্ত করার পথপ্রদর্শক মনে করা হয়। তার প্রতিষ্ঠানের বিজয় বাংলা কিবোর্ড ১৯৮৮ সালে প্রকশিত হয় যা প্রথম বাংলা কিবোর্ড এবং ইউনিকোড আসার পূর্বপর্যন্ত বহুল ব্যবহৃত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ও সাধারণ বিষয়ের ওপর অনেকগুলো বইয়ের লেখক তিনি।
মোস্তাফা জব্বার পেশায় ছিলেন একজন সাংবাদিক। দেশ স্বাধীনের পরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই তিনি দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। একটা সময় তিনি চলচ্চিত্র সাংবাদিকতাতেও জড়িয়ে পড়েন। সিনেমাপাড়ায় মোস্তাফা জব্বার বহুল পরিচিত এক নাম।
মজার ব্যাপার হলো- চলচ্চিত্রবিষয়ক পত্রিকা সম্পাদনার মধ্য দিয়েই প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বারের উত্থান বলে মনে করেন অনেকে। এর আগ পর্যন্ত তার পরিচয় ছিল একজন তুখোড় ছাত্র রাজনীতিবিদ, জনপ্রিয় সাংবাদিক। কিন্তু ১৯৮৭ সালে ‘আনন্দপত্র’ নামে সিনেমা ম্যাগাজিন প্রকাশ করে কম্পিউটারে বাংলা লেখা প্রথম পত্রিকার যাত্রা শুরু করেন তিনি। আর সেই ইতিহাস সৃষ্টির মধ্য দিয়েই নিজেকে নিয়ে যান অন্য উচ্চতায়, পরিচিত হন ‘প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার’ হিসেবে। যে পরিচয়ের হাত ধরে আজকের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। যদিও নিজেকে তিনি প্রযুক্তিবিদের চেয়ে বাংলা ভাষার প্রেমিক ভাবতেই বেশি পছন্দ করেন।
তথপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদান রাখা এবং বিজয় বাংলা কীবোর্ড ও সফটওয়্যার আবিষ্কার করার জন্য তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সেরা সফটওয়্যারের পুরষ্কার, পশ্চিমবঙ্গের কমপাস কম্পিউটার মেলার সেরা কমদামী সফটওয়্যারের পুরষ্কার, দৈনিক উত্তরবাংলা পুরষ্কার, পিআইবির সোহেল সামাদ পুরষ্কার, সিটিআইটি আজীবন সম্মাননা ও আইটি এ্যাওয়ার্ড, বেসিস আজীবন সম্মাননা পুরষ্কার, বেস্টওয়ে ভাষা-সংস্কৃতি পুরষ্কার, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদ সম্মাননা, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি ও সিলেট শাখার সম্মাননা বিশ্বমেধাসম্পদ সংস্থার আবিষ্কারক-উদ্যোক্তার স্বীকৃতি এবং অর্থনৈতিক ও মানবিক উন্নয়ন সংস্থার নেত্রকোণার গুনীজন সম্মাননা, রাহে ভান্ডার এনোবল এওয়ার্ড ২০১৬ (প্রযুক্তিবিদ হিসেবে) এবং এসোসিও ৩০ বছর পূর্তি সম্মাননাসহ ২০টি পুরষ্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। এছাড়াও তার রয়েছে অসংখ্য শুভেচ্ছা সম্মাননা।
উল্লেখ্য, টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন নন্দিত এই প্রযুক্তিবিদ। ২ জানুয়ারি তিনি শপথ নেন মন্ত্রী হিসেবে। আজ (বুধবার) ৩ জানুয়ারি তাকে ডাক, যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত